uttaraganabhaban

প্রতিষ্ঠাতা

দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রাজা দয়ারাম রায় (১৬৮০-১৭৬০) তিনি ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান সিংড়া উপজেলার কলম গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি নাটোররাজ রামজীবনের একান্ত অনুগত কর্মচারী ছিলেন।১৭০৬ মতান্তরে ১৭১০ সালে রাজা রামজীবন দয়ারামের উপর সন্তষ্ট হয়ে বাসস্থান নির্মাণ এর জন্য তাকে দিঘাপাতিয়ার কিছু জমি (প্রায় ৪৫ একর) দান করেন।যেখানে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি তথা বর্তমান উত্তরা গণভবন গড়ে উঠে।১৭১৪ সালের গোড়ার দিকে ভূষণার জমিদার সীতারামের পরাজয়ের মূলে ছিল দয়ারামের বিচক্ষণতা ও কূটকৌশল। সীতারামকে দমনে বাংলার নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁর সেনাবাহিনীর সাথে বাংলার যে কয়জন জমিদার সহযোগীত করেছিলেন তাদের মধ্যে নাটোরের রামজীবন অন্যতম। আর নাটোররাজের পক্ষ থেকে সে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন দয়ারাম।সীতারামের পতনের পর রামজীবন নবাব মূর্শিদ কুলি খাঁর নিকট থেকে ভূষণা ও মাহমুদাবাদের জমিদারি লাভ করেন।নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁ খুশি হয়ে দয়ারাম রায়কে "রায়রায়ান" উপাধ দেন এবং রামজীবন পুরস্কার হিসেবে দয়ারামকে দান করেন বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা এলাকা তথা নওখিলা(নয়াকিলা)পরগণা।এটিই দিঘাপতিয়া রাজ বংশের প্রথম জমিদারি। অর্থাৎ নাটোররাজের দেওয়ান থাকাকালেই দয়ারাম রায় রামজিবন ও নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁ নিকট থেকে বেশ কয়েকটি পরগণা লাভ করেন।এগুলোর মধ্যে অন্যতম ভাতুরিয়ার তরফ নন্দকুজা,যশোর জেলার মহল কালনা ও পাবনা জেলার তরফ সেলিমপুর । তবে দিঘাপতিয়ার সবচেয়ে লাভজনক জমিদারি ছিল নওখিলা। এছাড়াও নওখিলার দাওকোপা (যমুনা) নদীর চরের জন্য দিঘাপতিয়ার রাজা সর্বপেক্ষা বেশি লাভ করেছেন। নাটোর রাজের দুঃসময়ে ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দে দয়ারাম রায় দিঘাপতিয়া রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন। রাজা রামজীবন এরপর রানী ভবানীর ও বিশ্বস্ততা অর্জন করেন দয়ারাম রায়। রানী ভবানী দয়ারাম রায় কে এতো বিশ্বাস করতেন যে, রানীর পক্ষে দয়ারাম রায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দস্তখত করতেন।কথিত আছে ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে রানী ভবানী দয়ারাম রায়ের নেতৃত্বে সৈন্য প্রেরণ করেছিলেন। তিনি নিজে শিক্ষিত না হলেও সংস্কৃত ভাষা চর্চার জন্য চতুষ্পাঠী স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পণ্ডিতদের নিয়মিত বেতন প্রদান করেছেন, এছাড়াও জমি দান এবং পুকুর খনন তার অন্যতম কীর্তি। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ৮০ বছর বয়সে পুত্র জগন্নাথ রায় ও ৫ কন্যা রেখে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দয়ারাম রায় পরলোকগমন করেন ।